Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ইসরায়েলের বন্দরকে দেউলিয়া করে দিল ইয়েমেন: হুথি বিদ্রোহীদের হামলায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত রেড সি-র বাণিজ্যপথ



এইমাত্র পাওয়া সংবাদ প্রতিবেদন :নিউজ ডেস্ক | ১৮ জুলাই ২০২৫

ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান সামুদ্রিক বন্দর ব্যবস্থাপনায় নজিরবিহীন বিপর্যয় নেমে এসেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের ধারাবাহিক হামলায়। রেড সি অঞ্চলে চালানো সামরিক অভিযান, ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে পরিচালিত হামলার জেরে শুধু জাহাজই নয়, ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলোর কার্যক্রমও প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।

গত সপ্তাহে হুথি বিদ্রোহীরা দুটি বাণিজ্যিক জাহাজ—Magic SeasEternity C—লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এর মধ্যে Eternity C ডুবে যায়, যাতে অনেক ক্রু সদস্য নিখোঁজ হন; তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছিলেন বাংলাদেশি ও ফিলিপিনো। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা সূত্র বলছে, হুথিদের এই হামলা মূলত গাজা ইস্যুতে ইসরায়েলের ভূমিকার বিরোধিতা করেই চালানো হয়েছে।

এদিকে প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েল গত শুক্রবার ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত এলাকা হোডেইদা, রাস ইসা ও সালিফ বন্দরে ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা হুথিদের জাহাজ নজরদারি সিস্টেম ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে Galaxy Leader নামক একটি জাহাজ, যা হুথিরা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করত।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সংঘাতে শুধু সামরিক নয়, অর্থনৈতিক দিক থেকেও বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে ইসরায়েল। হুথিদের লাগাতার হামলায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথ রেড সি হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য চলাচল করা এই রুটে বাণিজ্য কার্যক্রমে ব্যাপক বাধার সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে পরিবেশবিদদের দাবি, হুথি হামলা এবং ইসরায়েলি প্রতিশোধমূলক আঘাতে রেড সি অঞ্চলের সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থানও হুমকির মুখে পড়েছে। বিশেষ করে হোডেইদা বন্দরের জ্বালানি ট্যাঙ্ক ও ইন্ধন সরবরাহ ব্যবস্থায় বিস্ফোরণ ঘটে, যা সামুদ্রিক দূষণ ঘটানোর আশঙ্কা বাড়িয়েছে।

ইসরায়েলের অর্থনৈতিক গবেষকরা বলছেন, এই হামলার ফলে দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনায় মারাত্মক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদে "দেউলিয়া" পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে পারে। যদিও ইসরায়েল সরকার এই ঘটনাকে জাতীয় নিরাপত্তা সংকট বলে অভিহিত করে জরুরি ভিত্তিতে সামরিক ও কূটনৈতিক সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মহল, বিশেষ করে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, উভয় পক্ষকেই শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে। তবে বাস্তবতা হলো, রেড সি-কে ঘিরে যুদ্ধ-অর্থনীতি ও ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন এখনো বহাল রয়েছে, এবং তার ফলস্বরূপ বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক রুট এখন ভয়ানক অনিশ্চয়তার মুখে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ